ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আজকের আর্টিকেলটি মূলত গবাদি পশুর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ওষুধ নিয়ে। আজকে আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি উপস্থাপন করতে চলেছি গবাদি পশুর শারীরিক জটিলতা এবং সাধারণ রোগের সমাধানে ব্যবহৃত ওষুধটি নিয়ে।

ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি
আশা করি আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার পর এ সম্পর্কিত সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন। তো চলুন আর কাল ক্ষেপণ না করে আজকের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।

সূচিপত্রঃফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি

  • ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি
  • ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট খাওয়ানোর নিয়ম
  • ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর ক্ষতিকর দিক এবং নির্দেশনা
  • শেষ কথাঃ ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি

ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি

ফাস্ট ভেট কি? এটি কিসের ওষুধ? কেনই বা এটি ব্যবহার করা হয়? এমন প্রশ্ন হয়তো প্রায়ই মনে জাগ্রত হয়েছে। সে প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকে আর্টিকেলটি নিয়ে হাজির হয়েছি।এই ওষুধটি মূলত ভেটেনারি চিকিৎসকগণ গবাদি পশুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন। ফাস্ট ভেট ওষুধটি গবাদি পশুর ব্যাথা জনিত সমস্যার সমাধানে ভেটেনারি চিকিৎসকগণ ব্যবহার করেন। মানুষের মতো গবাদি পশু এবং পাখিরও চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিটি প্রাণ এর জন্যই সুস্থ এবং নিরাপদ জীবন প্রয়োজন। আমাদের মাঝে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা কিনা পশু পাখি পালন করতে ভালোবাসেন।

অনেক সময় দেখা যায় আমাদের সখের এ সকল পশুপাখি বিভিন্ন আঘাত জনিত কারণে কষ্ট পেয়ে থাকে। পশু পাখির যাবতীয় ব্যাথা এবং জ্বর জনিত সমস্যা সমাধানে ভেটেনারী চিকিৎসকগণ ‘ফাস্ট ভেট’ নামক ট্যাবলেট সাজেস্ট করে থাকেন। ফাস্ট ভেট ভালো ব্যথা নাশক বা জ্বর উপশমকারী ঔষধ। প্যারাসিটামল মূলত মানুষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। আমরা প্রায়ই কোন ব্যথা অনুভব হলে প্যারাসিটামলের মত বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকি। এ সকল ওষুধ সেবনে প্রাথমিকভাবে ব্যথার উপশম ঘটে।

ফাস্ট ভেট একটি প্যারাসিটামল বিপি ট্যাবলেট যা পশু পাখির ব্যাথা এবং জ্বর সারাতে ব্যবহৃত হয়। ফাস্ট ভেটে রয়েছে প্যারাসিটামল বিপি 2। প্যারাসিটামল হলো সব থেকে উপকারী ব্যাথা নাশক ওষুধ। যে সকল কারণে ফাস্ট ভেট ট্যাবলেটটি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়ে থাকেন তার মধ্যে রয়েছে– জ্বর ও ব্যাথা, ট্রমাজনিত ব্যাথা, অন্ত্রের প্রদাহ, প্রসব পরবর্তী ব্যাথা, অপারেটিভ পরবর্তী ব্যাথা, পুড়ে যাওয়া এবং ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।পশু-পাখির জ্বর এলে ফাস্ট ভেট ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।আঘাত লাগা ব্যাথার উপশম ঘটাতে ফাস্ট ভেট ব্যাবহার করা হয়।

অন্ত্রের প্রদাহ বা জ্বালা পোড়া সারাতে ফাস্ট ভেট ব্যাবহার করা হয়। এছাড়া পশুপাখির বাচ্চা প্রসব করার পর যে ব্যাথা হয় সে ব্যাথার উপশম ঘটাতে ফাস্ট ভেট ব্যাবহার করা হয়। পশুপাখির শরীরের কোন অংশ বা অঙ্গ পুড়ে গেলে উক্ত স্থানে ফার্স্ট ভেট ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় পশুপাখির শরীরের বিভিন্ন অংশ কোন কারণে ফুলে গেলে যেমন- হাড়ের গিট ফুলে গেলে, মাংস পেশী ফুলে গেলে ফাস্ট ভেট ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য যেকোনো সংক্রমণ ব্যাধির থেরাপি হিসেবে ফাস্ট ভেট ব্যাবহার করা হয়।অতএব একথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে ফাস্ট ভেট ওষুধটি পশুপাখির জ্বর এবং ব্যাথা জনিত সমস্যার উপশমের জন্য ভেটেনারি চিকিৎসকগণ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট খাওয়ানোর নিয়ম

আগেই জেনেছি ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট কেন ব্যবহার করা হয়। এবার জানতে চলেছি ফাস্ট ভেট ব্যাবহারের বা খাওয়ার নিয়ম কি? কি পরিমাণে এবং দিনে মোট কতবার এটি ব্যবহার করা যাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক এ সসম্পর্কিত আলোচনা।মানুষের মতো গবাদি পশু পাখিরও রোগ বালাই হয়ে থাকে। আর তাদের এসকল রোগ থেকে উদ্ধার পেতে ববর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আশির্বাদ স্বরুপ বিভিন্ন চিকিৎসার আবির্ভাব হয়েছে। আজকের আলোচনার বিষয় হলো ফাস্ট ভেট নামন ওষুধ এর ব্যবহার বিধী বা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। 

আরো পড়ুনঃ মাল্টিভিট প্লাস এর কাজ কি জেনে নিন

সকল শ্রেণীর ওষুধেরই নির্দিষ্ট ব্যবহার বিধি এবং মাত্রা রয়েছে। যখন এসকল মাত্রা অতিক্রম করা হয় তখন এর দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। এই কারণে ওষুধের ব্যবহার বিধি বা মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গবাদি পশু পাখির ও মানুষের ওষুধের মত মাত্র নির্ধারিত রয়েছে। এসকল মাত্রা বিভিন্ন প্রাণীর জন্য বিভিন্ন রকম। যেমন — ১৩০ থেকে ১৪০ কেজি ওজনের গবাদি পশুর জন্য ফাস্ট ভেট বোলাস তিন দিন পর পর প্রতিদিন দিনে তিন (৩) বার করে দেওয়া।

আরো পড়ুনঃ Traxyl 500 এর কাজ কি

পোল্ট্রির জন্য ১০ লিটার পানির মধ্যে ৪ থেকে ৫ দিনের জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার ফাস্ট ভেট দেওয়া হয়। মুরগীর জন্য ১ গ্রাম ওষুধ ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে ৪ থেকে ৫ দিন নিয়মিত দিনে ২ থেকে ৩ বার খাওয়ানো যেতে পারে। তবে একটা কথা বলা বাঞ্ছনীয়, যে কোন ঔষধ হোক সেটা মানুষের জন্য কিংবা পশুপাখির জন্য তা ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসক এর পরামর্শ নেয়া একান্ত জরুরী।

ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর ক্ষতিকর দিক এবং নির্দেশনা

প্রায় সকল ওষুধেরই কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। মানুষের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধে আমরা এসকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত তথ্য দেখতে পাই। ঠিক তেমনি পশুপাখির ক্ষেত্র ব্যবহৃত ওষুধেও কিছু ক্ষতিকর দিক এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। তবে পশু পাখির ক্ষেত্রে ফার্স্ট ভেট নামক যে ওষুধটি ব্যবহার করা হয় সেটের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অন্যান্য ওষুধের তুলনায় কম। তবুও এর ব্যবহারে কিছু সতর কথা অবলম্বন করা উচিত। যেমন –

আরো পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম

যেসকল প্রাণীর কিডনির সমস্যা বা হেপাটিক ভাবে অসুস্থ সেসকল প্রাণীর ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল বোলাস সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। ফাস্ট ভেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে কম তবে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষণীয়। যেমন প্যানক্রিয়া টাইটিস, অ্যালার্জির ভাব এবং ত্বকের ফুস্কুড়ির মতো প্রতিক্রিয়া মাঝে মাঝে লক্ষণীয় হয়ে থাকে।আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো প্রাণী যখন গর্ভবতী বা স্তন্যদান কারী সে সময়ও ফাস্ট ভেট ব্যবহার করা যাবে এক্ষেত্রে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আগেই বলেছি এ সকল ক্ষতিকর দিক বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব কম পরিলক্ষিত হয়। তাই এ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তবে এ কথা বলে রাখা শ্রেয় ভেটেনারি চিকিৎসক এর পরামর্শ ব্যতীত প্রাণীকে কোন ওষুধ ব্যবহার করানো উচিত নয়। 

শেষ কথাঃ ফাস্ট ভেট ট্যাবলেট এর কাজ কি

প্রিয় পাঠক, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল ফাস্ট ভেট নামক একটি গবাদি পশুর ওষুধ নিয়ে। যা মূলত প্যারাসিটামল বিপি। এটি গবাদি পশুর যাবতীয় ব্যথা নাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গবাদি পশুর বিভিন্ন ধরনের ব্যথা জনিত রোগের উপশম করতে উক্ত ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।আমি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছি গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফাস্ট ভেট ওষুধের কাজ সম্পর্কে, ফাস্ট ভেট খাওয়ানোর নিয়ম কি? এবং সেই সাথে ট্যাবলেটের ক্ষতিকর দিক এবং নির্দেশনা সম্পর্কে।

আরো পড়ুনঃ সহজেই খাবার তাড়াতাড়ি হজম করার উপায় জানুন

সেই সাথে একথা উল্লেখ করেছি, মানুষও কিংবা পশুপাখি যেকোনো ধরনের ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসা করে পরামর্শ নিয়ে তারপর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবহার করতে হবে সম্মানিত পাঠক বৃন্দ, আপনার কাঙ্খিত বিষয় সম্পর্কিত তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনার মহামূল্যবান সময় টুকুর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পেরেছি। আপনার মূল্যবান সময়টুকু দিয়ে আজকে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সেই সাথে সকলের সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থ জীবনের কামনা করে আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ। 

Leave a Comment